আমি ব্লগ লেখার খুব বেশি সমর্থক কোনওদিনও ছিলাম না, সত্যি কথা বলতে কি এখনও যে আছি তা নয় । তার একটা প্রধান কারণ আমার ধারণা ব্লগ লেখার থেকেও পড়া অনেক বেশি ক্লান্তিকর । অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, অনেক সময়ই পড়তে শুরু করে শেষ করা হয়ে ওঠে না । নিজের ধৈর্য এবং/অথবা আগ্রহের অভাবকে 'ঠিক আছে, বাকিটা পরে পড়ব' জাতীয় অজুহাত দিয়ে ঢেকে দিই - আর আমরা সবাই জানি সেই 'পরে' টা আর কখনওই আসে না । তো, এই কারণে আমি ঠিক করেছি আমার ব্লগকে কখনওই অন্যের ক্লান্তির কারণ ঘটাব না, আমার ব্লগের বিষয় হবে প্রধানতঃ ভ্রমণ । আমার মতো যেসব বাঙালিরা ঘুরতে ভালোবাসে, তাদের জন্য আমার ব্লগ হবে তথ্যের একটা উৎস । আমার নিজের একটা অভ্যেস আছে, কোনও জায়গায় বেড়াতে যাওয়ার আগে সেই জায়গাটা সম্পর্কে কিছুটা জেনে নেওয়ার চেষ্টা করি, আর ইন্টারনেট ঘাঁটতে গিয়ে আমার বরাবরই মনে হয়েছে যে ইন্টারনেটে লেখালেখি করার ব্যাপারে বাঙালিদের থেকে কুঁড়ে খুব কম শিক্ষিত জাতই আছে । আমার মতো যেসব বাঙালিরা আছে, যারা ইন্টারনেটে কোনো একটা ইংরিজীতে লেখা দেখলেই না পড়ার চেষ্টা করে, তাদের জন্য আমার ব্লগ সহায়ক হবে, এই বিশ্বাস নিয়ে শুরু করছি আমার ভ্রমণকাহিনী । আগেই বলে রাখি, আমি স্ট্যাটিসটিক্সের ছাত্র ছিলাম, তাই আমার ব্লগে তত্ত্বের থেকে তথ্যের দেখাই মিলবে বেশি ।

Tuesday, September 21, 2021

দীঘা ভ্রমণ

গেও বলেছি বাঙালীর তিনটে ঘোরার জায়গা দী-পু-দা সম্পর্কে আমার ব্লগে কখনও লিখব না। পু অর্থাৎ পুরী আর দা অর্থাৎ দার্জিলিঙ এর আগেই হয়ে গেছে, বাকি ছিল শুধু দী অর্থাৎ দীঘা। দীঘা আমি এর আগেও চারবার গেছি, কিন্তু শেষবার যখন গেছি তখনও ব্লগ লিখতাম না। এবারেও দীঘায় গিয়ে সেরকম নতুন এমন কিছুই দেখিনি যা জানানোর জন্য একটা পূর্ণদৈর্ঘ্যের ব্লগ লেখার দরকার হতে পারে। তাই পুরী আর দার্জিলিঙের মতো দীঘা ভ্রমণেও থাকছে শুধুমাত্র ভ্রমণপথ, ভ্রমণের সারসংক্ষেপ আর উপসংহার।

বিশেষ সতর্কীকরণঃ

১. এই ভ্রমণে আমরা জনবহুল স্থানে, বিশেষতঃ স্টেশনে, ট্রেনে ইত্যাদি জায়গায় সারাক্ষণ মাস্ক পরে থেকেছি এবং দূরত্ববিধি যথাসম্ভব মেনে চলার চেষ্টা করেছি। সেইসঙ্গে প্রয়োজনমতো হ্যান্ড স্যানিটাইজারও ব্যবহার করেছি।

২. এই ভ্রমণে আমরা কোনও অবস্থাতেই কোনও পলিথিন বা প্লাস্টিক ব্যবহার করিনি। অর্থাৎ প্লাস্টিকের ব্যবহার না করেও এই ভ্রমণ অনায়াসে করা যায়।

৩. এই ভ্রমণে আমরা কোনও কাগজ ব্যবহার বা নষ্ট করিনি। হোটেল বুকিং-এর রশিদ-এর প্রিন্ট আউট ব্যবহারের কোনও প্রয়োজন হয় না।

৪. এই ভ্রমণে আমাদের দলের কেউ ধূমপান করেনি। ধূমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর।

আমার ব্লগের সমস্ত পাঠকদের বিশেষভাবে অনুরোধ করছি বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে করোনা ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করার জন্য সরকারী বিধিনিষেধ মেনে চলার জন্য। সেইসঙ্গে অনুরোধ করছি প্লাস্টিক, অপ্রয়োজনীয় কাগজের ব্যবহার আর ধূমপান বর্জন করার জন্য।

ভ্রমণপথঃ

রবিবার ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ঃ হাওড়া স্টেশন থেকে সকাল ৬ঃ৫০ মিনিটে হাওড়া দীঘা স্পেশাল ট্রেন - সকাল ১০ঃ১০ মিনিটে দীঘা। নিউ দীঘায় রাত্রিবাস।

সোমবার ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ঃ নিউ দীঘা থেকে ওল্ড দীঘায় গিয়ে ঘন্টাখানেক ঘোরা। নিউ দীঘায় রাত্রিবাস।

মঙ্গলবার ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ঃ দীঘা থেকে দুপুর ১২ঃ৩০ মিনিটে দীঘা হাওড়া স্পেশাল ট্রেন (সঠিক সময় সকাল ১০ঃ৩৫ মিনিট) - দুপুর ৩ঃ৩০ মিনিটে সাঁত্রাগাছি (ট্রেনটা সাঁত্রাগাছি থেকে হাওড়া পর্যন্ত বাতিল হয়ে গিয়েছিল)।

সারসংক্ষেপঃ

১. কলকাতা থেকে সড়কপথে নিউ দীঘার দূরত্ব ১৮৫ কিলোমিটারের মতো। ওল্ড দীঘার দূরত্ব এর থেকে ১.৫ কিলোমিটার কম।

২. কলকাতার বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন সময়ে দীঘা যাওয়ার জন্য বাস ছাড়ে। বাসে দীঘা যেতে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘন্টা সময় লাগে।

৩. দীঘা যাতায়াতের জন্য হাওড়া থেকে দৈনিক দু'টো করে ট্রেন চলে। যেতে ৩ঃ২০ ঘন্টার মতো সময় লাগে।

৪. দীঘা স্টেশনটা প্রকৃতপক্ষে নিউ দীঘায়। স্টেশনের কাছাকাছির মধ্যেই অনেকগুলো হোটেল আছে। স্টেশন থেকে টোটো করে অথবা হেঁটে হোটেলে যাওয়া যায়।

৫. দীঘায় আমরা যে হোটেলে ছিলাম তার নাম 'হোটেল আমার দীঘা'। এদের ওয়েবসাইট http://www.hotelamardigha.com/ থেকে বুকিং করা যায় অথবা https://www.makemytrip.com/ থেকেও বুকিং করা যায়। হোটেলের যোগাযোগের নম্বরঃ 9874778528.

৬. 'হোটেল আমার দীঘা' খুবই ভালো একটা হোটেল। এর ঘর থেকে সমুদ্র দেখা না গেলেও এখান থেকে সমুদ্র হেঁটে মিনিট পাঁচেকের বেশি লাগে না। হোটেলের পরিষেবা এবং খাবার খুবই উন্নত মানের।

৭. দীঘার সমুদ্রের পাড় বাঁধানো আর এখানে বসে বসে সমুদ্রের শোভা উপভোগ করা যায়। জোয়ারের সময়ে জলের টান বেশি থাকলে অবশ্য এখানে পুলিশ বসতে দেয় না।

৮. দীঘা থেকে কাছাকাছির মধ্যে তালসারিতে ঘুরে আসা যায়। যাতায়াতের পথে চন্দনেশ্বর মন্দির পড়ে, সেটাও দেখে নেওয়া যেতে পারে। এই দু'টো জায়গাই উড়িষ্যার মধ্যে।

৯. দীঘা স্টেশনের একেবারে কাছে রয়েছে অমরাবতী লেক ও পার্ক। এখানে বোটিং, রোপওয়ের ব্যবস্থা আছে।

১০. নিউ দীঘার বিচের কাছে একটা মার্কেট আছে, এখানে সবধরনের জিনিসই পাওয়া যায়। এখান থেকে প্রয়োজনীয় বা অপ্রয়োজনীয় নানারকম জিনিস কেনা যেতে পারে।

১১. নিউ দীঘার বীচের একেবারে পাশেই সরকারী লিজ নেওয়া একটা রেস্ট্যুরেন্ট আছে। এখানে সস্তায় অত্যন্ত ভালো মানের খাবার পাওয়া যায়।

১২. দীঘার সমুদ্রে জোয়ারের জলোচ্ছাস দেখার আগ্রহ থাকলে অবশ্যই পূর্ণিমা বা অমাবস্যায় যাওয়া উচিৎ। অমাবস্যায় জলোচ্ছাসের মাত্রা পূর্ণিমার থেকে বেশি ঠিকই, কিন্ত পূর্ণিমার সন্ধ্যে থেকে রাত পর্যন্ত জলের উপর চাঁদের আলোর সৌন্দর্যও কিছু কম আকর্ষক দৃশ্য নয়।

উপসংহারঃ

দীঘার সমুদ্রসৈকত
বাঙালীদের মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় ঘোরার জায়গা যদি পুরী হয়, তাহলে দীঘা নিঃসন্দেহে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। দীঘা যাতায়াতের খরচ পুরীর থেকে কম কিন্তু দীঘায় সেরকম কোনও বড় মন্দির না থাকায় এর কোনও ঐশ্বরিক আকর্ষণ নেই। একসময়ে দীঘার খ্যাতি ছিল হানিমুনের জন্য, আজকাল মূলতঃ সপ্তাহান্তের ঘোরার জায়গায় পরিণত হয়েছে। দীঘা যাওয়ার জন্য কোনও প্রস্তুতি লাগে না, ট্রেনের বুকিং অথবা বাসের টিকিট সহজেই পাওয়া যায়। নিজের গাড়ি নিয়ে গেলেও সহজেই যাওয়া যায়। দীঘায় আগে থেকে বুকিং না করে গেলে ঘর পেতেও কোনও অসুবিধে হয় না। কম খরচে নির্ঝঞ্ঝাটে সমুদ্রসৈকতে দু'তিনদিন কাটানোর জন্য দীঘা একেবারে আদর্শ জায়গা। পুরী বা দার্জিলিঙের মতো দীঘাও বছরের যেকোনও সময়ে যাওয়া যায় আর এখানে সবকিছুই খুব সহজে পাওয়া যায়। পুরীর মতো এখানেও "ঘুরে খুব ভালো লাগল" এটা আমি কখনও কারুর মুখে যেমন শুনিনি, তেমনই "দূর দূর, দীঘা আবার একটা যাওয়ার মতো জায়গা হল ?" এরকম বলতেও কাউকে শোনা যায় না। তাই জীবনে কখনও দীঘায় না গিয়ে থাকলে (যেটার সম্ভাবনা খুবই কম) অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের জন্য একবার যেতে সব বাঙালিকেই অনুরোধ করব।

দীঘা ভ্রমণের আরও ছবি দেখতে হলে click here.

Sunday, September 12, 2021

কলকাতা ভ্রমণ : পর্ব - ৫ (নেহেরু চিলড্রেন্স মিউজিয়াম)

লকাতা ভ্রমণের প্রথম পর্ব চিড়িয়াখানা ভ্রমণের পোস্টে লিখেছিলাম "কলকাতার চিড়িয়াখানা প্রায় সব্বাই ছোটবেলায় একবার করে যায় আর বহু লোকের ক্ষেত্রে দেখেছি বড় হয়ে আর কিছুতেই যাওয়া হয়ে ওঠে না"। কলকাতার নেহেরু চিলড্রেন্স মিউজিয়ামের ক্ষেত্রেও বোধহয় একই কথাই প্রযোজ্য, যদিও চিড়িয়াখানায় যত লোক ছোটবেলায় যায় তত লোক বোধহয় নেহেরু চিলড্রেন্স মিউজিয়ামে যায় না। আমি  এখানে ছোটবেলায় বারদুয়েক গেছি আর তারপর বড় হয়ে কখনও যাওয়া হয়নি। এবারে গেলাম - প্রধানতঃ আমার দুই কন্যাকে তাদের ছোটবেলার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করাতে (যাতে বড় হয়ে ওরাও একই ধরনের কথা বলতে পারে !)। কলকাতা ভ্রমণের এই পর্বে থাকছে সেই নেহেরু চিলড্রেন্স মিউজিয়ামে আমাদের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা।

১২ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ - রবিবার আমরা নেহেরু চিলড্রেন্স মিউজিয়াম পৌঁছলাম দুপুর চারটে পনেরো নাগাদ। নেহেরু চিলড্রেন্স মিউজিয়াম প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যে ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে (সোমবার বন্ধ)। এবারে আমরা সাতজন - আমরা ছ'জন ছাড়া আমাদের সঙ্গে টুটুন। নেহেরু চিলড্রেন্স মিউজিয়ামের অবস্থান জওহরলাল নেহেরু রোডে - এক্সাইডের মোড় থেকে এস্‌প্ল্যানেডের দিকের রাস্তা অর্থাৎ জওহরলাল নেহেরু রোড ধরে মিনিট খানেক হাঁটলে বাঁদিকে মিউজিয়ামটা পড়ে। এখানে রাস্তার উপরেই গাড়ি পার্কিং করা যায়।

নেহেরু চিলড্রেন্স মিউজিয়ামের ঢোকার টিকিট বড়দের মাথাপিছু ২০/- টাকা আর ছোটদের (১৬ বছরের নিচে) মাথাপিছু ১০/- টাকা। টিকিট কেটে আমরা ভিতরে ঢুকলাম। পুরো বাড়িটা ছ'তলা যদিও দেখার জিনিস শুধুমাত্র দোতলা, তিনতলা আর চারতলায়। এখানকার দেখার জিনিসগুলোকে মোটামুটি চারভাগে ভাগ করা যায় - পুতুলের গ্যালারি, গণেশের গ্যালারি, রামায়ণ আর মহাভারত। এর মধ্যে পুতুলের গ্যালারি সবতলাতেই আছে, মহাভারত আছে তিনতলায় আর রামায়ণ আর গণেশ চারতলায়।

পুতুলের গ্যালারি
পুতুলের গ্যালারি -
 নেহেরু চিলড্রেন্স মিউজিয়ামের পুতুলের গ্যালারিতে পুতুলের সম্ভার দেখে তাজ্জব বনে যেতে হয় ! ঘরের চারদিকের দেওয়ালে এবং মাঝখানে বিশাল কাচের শোকেসে এই পুতুলগুলো রাখা হয়েছে। দেশ-বিদেশের নানারকমের পুতুল রয়েছে এই গ্যালারিতে। বিভিন্ন আকারের, বিভিন্ন ভঙ্গিতে দাঁড়ানো বসা শোওয়া এইসব পুতুলগুলো বিভিন্ন দেশের বা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের শিল্পকলার অসাধারণ নিদর্শন। দুর্গার মূর্তি থেকে ইংরেজ বণিক, ব্রাহ্মণ পুরোহিত থেকে মিজোরামের রাজকন্যা, জার্মান থেকে রাশিয়ার পুতুল - সবই রয়েছে এইসব পুতুলের ঘরগুলোতে। একটা একটা করে সবকটা পুতুল দেখা সম্ভব নয়, তবে প্রত্যেকটা পুতুলই দেখতে যে খুবই সুন্দর - সেটা বলতেই হবে। এখানে চাইলে নিজের কাছে থাকা পুতুল দিয়েও দেওয়া যায়, এরা সেগুলো এই সংগ্রহের মধ্যে রেখে দেবে। বিভিন্ন দেশের সরকার থেকে এখানে বিভিন্ন পুতুল উপহার দেওয়া হয়েছে, সেগুলো এখানে লেখাও রয়েছে।

অর্জুনের লক্ষ্যভেদ
মহাভারত -
 দোতলা আর তিনতলার পুতুলের গ্যালারির পরে আমরা গেলাম তিনতলার মহাভারত গ্যালারি দেখতে। এখানে একটা বিশাল ঘরের মধ্যে মহাভারতের বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য ঘটনার মডেল তৈরি করে কাচের শোকেসের মধ্যে রাখা রয়েছে। শোকেসের সামনে দেওয়ালের উপরদিকে সেই ঘটনার বিবরণ লেখা হয়েছে। এইসব ঘটনার মধ্যে পাশা খেলা, পান্ডবদের বনবাস, অর্জুনের লক্ষ্যভেদ, মহাভারতের যুদ্ধ, ভীষ্মের শরসজ্জা ইত্যাদি অনেক কিছুই রয়েছে। আমার মতে মহাভারত সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মহাকাব্য - এর মতো এত ঘটনাবহুল কাব্যগ্রন্থ পৃথিবীতে আর আছে বলে আমার জানা নেই। সেই মহাভারতের ঘটনাবলীর এত সুন্দর মডেল দেখতে খুবই ভালো লাগছিল। শুধু আমরা বড়রা নই, মহাভারতের বিস্তারিত গল্প কথা-কলিও জানে, তাই ওরাও মডেলগুলো দেখে নিজেরাই কোনটা কি বলে যাচ্ছিল।

রাবণের সীতাহরণ
রামায়ণ -
 চারতলায় রামায়ণ গ্যালারি। মহাভারতের মতো এখানেও বিশেষ বিশেষ ঘটনাবলীর মডেল তৈরি করে কাচের শোকেসে রাখা রয়েছে। রামের হরধনু ভঙ্গ, রাবণের সীতাহরণ, হনুমানের লঙ্কাকান্ড ইত্যাদি নানারকম ঘটনার মডেল রয়েছে এখানে। ব্যক্তিগতভাবে আমার রামায়ণ যদিও সেরকম কিছু ভালো লাগে না (বলতে চাইছি পোষায় না), কিন্তু তাও গ্যালারিটা খুবই ভালো লাগল।









গণেশের গ্যালারি
গণেশ গ্যালারি -
 চারতলায় রামায়ণ গ্যালারি থেকে বেরিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামার আগে বাঁদিকে গণেশের গ্যালারি। এখানে অনেকগুলো ছোট ছোট নানাধরনের গণেশের মূর্তি রয়েছে। অনেকগুলোই বেশ মজাদার, যেমন - ফুটবলার গণেশ, ব্রাহ্মণ গণেশ, স্কুলবয় গণেশ, পুলিশ গণেশ ইত্যাদি। এছাড়া কয়েকটা চিরাচরিত গনেশের মূর্তিও রয়েছে। এইসব দেখে আমরা নেহেরু চিলড্রেন্স মিউজিয়াম থেকে বেরিয়ে এলাম।

উপসংহারঃ

মিউজিয়ামের পুতুলের সামনে আমার দুই পুতুল !
কলকাতা শহরে ছোটদের দেখার মতো যে কয়েকটা জায়গা রয়েছে, তার মধ্যে নেহেরু চিলড্রেন্স মিউজিয়াম বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এখনকার দিনের মা-বাবারা বাচ্চাদের এখানে কতটা নিয়ে যান জানি না, তবে গেলে বাচ্চাদের ভালো লাগারই কথা। আমার ছোটবেলায় আমার ভালো লাগত, কথা-কলির ছোটবেলায় ওদেরও ভালো লেগেছে। পুরো মিউজিয়ামটা দেখতে ঘন্টাদেড়েকের মতো লাগে, তাই কোনও একটা ছুটির দিনে এখানে গেলে সময়টা ভালোই কাটবে। নেহেরু চিলড্রেন্স মিউজিয়ামে শুধুমাত্র চারধরনের গ্যালারি ছাড়াও ছোটদের আঁকা, আবৃত্তি, নাচ, গান, ম্যাজিক, নাটক শেখানো হয়। কেউ নিজের ছেলেমেয়েকে এসব শেখাতে চাইলে এখানে যোগাযোগ করতে পারেন (নাও পারেন, আপনার ইচ্ছে !)। তবে ছোটবড় নির্বিশেষে এই মিউজিয়ামটা একবার দেখে আসার জন্য সবাইকেই অনুরোধ করছি।

নেহেরু চিলড্রেন্স মিউজিয়ামের আরও ছবি দেখতে হলে click here.

কলকাতা ভ্রমণ : পর্ব - ৪ (জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি)

লকাতা শহরের প্রথম পাঁচটা দ্রষ্টব্য জায়গা কি কি - এই প্রশ্নের উত্তরে যে যাইই বলুক, তার মধ্যে যে নামটা থাকবেই সেটা হল জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মস্থান ও বাসস্থান হিসেবে ঐতিহাসিক ও পর্যটনের দিক থেকে এই বাড়ির গুরুত্ব অপরিসীম। ছোটবেলা থেকে অনেকবার বিভিন্ন সময়ে এখানে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হলেও শেষ পর্যন্ত আমার আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি। তাই এই করোনা পরিস্থিতিতে নিজের শহরটাকে দেখে নেওয়ার যে প্রকল্প আমরা শুরু করেছি, তার মধ্যে এবারে সংযোজন হল জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি।

যাওয়ার দিন ১২ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ - আমরা জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি পৌঁছলাম তখন দুপুর ১২ টা। ঠাকুরবাড়ি সোমবার বন্ধ থাকে। বাকি দিনগুলো সকাল ১০ঃ৩০ মিনিট থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সাধারণ মানুষের জন্য খোলা থাকে। এবারে আমাদের দল সাতজনের - আমরা ছ'জন ছাড়া আমাদের সঙ্গে টুটুন। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির ভৌগোলিক অবস্থান জানেনা এরকম মানুষ বোধহয় কলকাতায় নেই, তবে আমার ব্লগের কলকাতার বাইরের (বা পশ্চিমবঙ্গের বাইরের বা ভারতবর্ষের বাইরের !) পাঠক/পাঠিকাদের জন্য জানাচ্ছি জায়গাটা গণেশটকি বা সিংহীবাগান অঞ্চলে আর গিরীশপার্ক মেট্রো স্টেশন থেকে খুবই কাছে। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে ঢোকার দরজাটা চিৎপুর রোডের উপরে। এখানে গাড়ি পার্কিং-এর জায়গাও আছে। তবে ভীড়ের দিনে গেলে পার্কিং-এর জায়গা পাওয়া সহজ হবে না কারণ এখানে জায়গা সীমিত।

জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ করে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। গেটের পাশে টিকিট কাউন্টার। মাথাপিছু ২০/- টাকা করে টিকিট কেটে (বাচ্চাদের লাগে না) আমরা ভিতরে ঢুকলাম। এখানে জানিয়ে রাখি জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে ছবি তুলতে গেলে তার জন্য আলাদা করে টাকা দিতে হয়। আর এঁরা সেই ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর। ভিতরে কোথাও লুকিয়ে ছবি তোলার চেষ্টা করাও উচিৎ নয় কারণ সর্বত্র সি সি ক্যামেরা লাগানো আছে। আমরা ভিতরে কোনও ছবি তুলিনি, কারণ আমরা টাকা দিইনি।

ঠাকুরবাড়িতে ঢোকার আগে
টিকিট কেটে আমরা প্রথমে গেলাম টিকিট কাউন্টারের ঠিক পিছনে ঠাকুরবাড়ির গ্যারেজের দিকে। এখানে রবীন্দ্রনাথ ব্যবহৃত ১৯৩৩ সালের হাম্বার সিডান গাড়িটা রাখা আছে। গাড়ি দেখার পর ভিতরের বিশাল মাঠের পাশ দিয়ে আমরা এগিয়ে গেলাম লাল রঙের মূল বাড়িটার দিকে। বাড়িতে ঢোকার মুখে একটা সিঁড়ি আছে, সেখানে সবাইকে জুতো খুলতে হয়। তারপর আমরা প্রবেশ করলাম এই ঐতিহ্যমন্ডিত ঠাকুরবাড়ির ভিতরে।

ঠাকুরবাড়ির একতলায় কিছু দেখার নেই, সব দর্শনীয় জায়গাগুলো দোতলা আর তিনতলায়। তাছাড়া চারতলার ছাদেও যাওয়া যায়, যদিও সেখানে দেখার কিছু নেই। সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠে আমরা একের পর এক ঘরগুলো দেখতে থাকলাম। ঠাকুরবাড়ি প্রকৃতপক্ষে একটা অত্যন্ত ধনী জমিদারবাড়ি, তাই এখানে তাঁদের ব্যবহৃত সবকিছুর মধ্যেই আভিজাত্য ও বিলাসিতার ছাপ সুস্পষ্ট। কোনঘরে গিয়ে কি দেখলাম সেটা আর আলাদা করে লিখছি না, তবে এটা বলতেই হবে যে বিশ্বভারতী এখানকার সবকিছু অত্যন্ত সুন্দরভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করে। রান্নাঘর, খাওয়ার ঘর, শোওয়ার ঘর, বসার ঘর ইত্যাদি দেখে আমরা একটা ঘরে ঢুকলাম যেখানে রবীন্দ্রনাথের জীবনের শেষ অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল (ডাক্তারদের মধ্যে ছিলেন স্বয়ং বিধানচন্দ্র রায়)।

ভিতরের বারান্দা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আরও কয়েকটা ঘর দেখলাম যেখানে নানারকম ছবি ইত্যাদি সংগ্রহ করা হয়েছে। তারপর আরও কয়েকটা ঘর দেখলাম যেখানে একটা ঘরের মধ্যে দিয়ে আরেকটা ঘরে যেতে হয়, সেটার ভিতর দিয়ে আরেকটা ঘরে যাওয়া যায় আর সেটার ভিতরে দিয়ে আরেকটা ঘরে যাওয়া যায়। সত্যি বলতে কি, বাড়িটা এতটাই বড় আর সেইসঙ্গে ভিতরের ম্যাপটাও বেশ জটিল। হারিয়ে যাওয়ার ভয় নেই, কিন্তু ভিতরে ঢুকে "কোন ঘরটা দেখলাম আর কোনটা বাকি রয়ে গেল" এটা হিসেব রাখা সহজ নয়। এই শেষের ঘরগুলো রবীন্দ্রনাথের বিদেশভ্রমণ সংক্রান্ত। রবীন্দ্রনাথ বেশ অনেকবার বিদেশে গিয়েছিলেন - এই ঘরগুলোতে প্রধানতঃ তাঁর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে ভ্রমণের সময়কার ছবি ও তথ্য রাখা আছে। সব ছবির লাগোয়া সবলেখা পড়া সম্ভব হয়নি, কারণ গেটে ঢোকার সময়ে আমাদের বলা হয়েছে একঘন্টার মধ্যে পুরোটা দেখে নেমে আসতে।

এরপর আমরা গেলাম একটা ঘরে সেখানে ঠাকুরবাড়ি বিভিন্ন ব্যক্তিদের পূর্ণ তৈলচিত্র আঁকা রয়েছে। আর এখানেই দেখতে পেলাম সেই মহান ব্যক্তির তৈলচিত্র - যিনি ঠাকুরবাড়িতে আমার আসার মূল অনুপ্রেরণা। তিনি এই বাড়ির নির্মাতা না হলেও আকারে অপেক্ষাকৃত ছোট বাড়িটিকে তিনিই সুবিশাল জমিদারবাড়ির আকার দিয়েছিলেন। একজন সাধারণ জমিদার হিসেবে জীবন শুরু করে আজ থেকে প্রায় দু'শো বছর আগে যিনি বাঙালিদের মধ্যে তো বটেই, সম্ভবতঃ ভারতবর্ষেরও সবথেকে ধনী ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছিলেন। জমিদারী, কয়লা, ব্যাঙ্কিং, ইন্সিওরেন্স, চটকল, চা, আফিম, জাহাজ ইত্যাদি আরও নানারকম জিনিসের ব্যবসা করে সেই যুগে যাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল কোটি টাকার উপরে (আজকালকার দিনের টাটা-আম্বানীদের থেকেও বেশি !)। যিনি রাজা রামমোহন রায়ের প্রায় সমস্ত সমাজসংস্কারমূলক কাজে ছিলেন তাঁর ছায়াসঙ্গী। যিনি মেডিক্যাল কলেজ, হিন্দু স্কুল প্রতিষ্ঠার মতো যেকোনও উন্নয়নমূলক আর সৃজনশীল কাজে সবসময়ে অকাতরে অর্থব্যয় করেছেন কিন্তু নিজে থেকেছেন প্রচারবিমুখ। যিনি ব্রাহ্মসমাজের শুরু থেকে ছিলেন তার প্রধান পৃষ্ঠপোষক। যিনি পরাধীন দেশের একজন নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও ইংল্যান্ডে স্বয়ং মহারাণী ভিক্টোরিয়ার আমন্ত্রণে তাঁর প্রাসাদে গিয়ে তাঁর আতিথেয়তা গ্রহণ করেছিলেন - যে সম্মান সেই যুগে খোদ ইংল্যান্ডের বহু অভিজাত সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিরাও পেতেন না। যিনি ছিলেন ফ্রান্সের সম্রাটের বন্ধু ও প্রিয়পাত্র। আমার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি যাওয়ার প্রধান কারণ সেই ব্যক্তির বাসস্থান দর্শন করা - তিনি প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর - এমন একজন 'প্রিন্স' যাঁর বাবা কোনও 'কিং' ছিলেন না !

এই শেষ লাইনটার জন্য আমি বিশেষভাবে উল্লেখ করতে চাই রাজা ভট্টাচার্য রচিত 'দ্বারকানাথ' বইটির নাম। প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর সম্পর্কে কিছু তথ্য আমি জানতে পারি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের 'সেই সময়' উপন্যাসে। মাস ছয়েক আগে রাজা ভট্টাচার্যের এই 'দ্বারকানাথ' বইটা থেকে আমি দ্বারকানাথ ঠাকুর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারি। 'সেই সময়' পড়ে যে মানুষটির প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা জন্মেছিল, 'দ্বারকানাথ' পড়ে তাঁকে মনে মনে ঠাকুরের আসনে বসিয়েছিলাম। রবীন্দ্রনাথ কারুর কারুর কাছে ঠাকুর, শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব কারুর কারুর কাছে ঠাকুর। ঠিক সেভাবেই প্রিন্স দ্বারকানাথ আমার কাছে ঠাকুর - 'বাঙালির দ্বারা ব্যবসা হয়না' প্রচলিত এই ধারণার গালে যিনি নিজেই একটি সপাট চড় ! আমার ব্লগের পাঠক/পাঠিকাদের মধ্যে যাঁদের বই পড়ার একটুআধটু অভ্যেস আছে, রাজা ভট্টাচার্যের 'দ্বারকানাথ' বইটা অবশ্যই পড়ার জন্য তাঁদের বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। অত্যন্ত যত্নসহকারে পড়ে অক্ষত অবস্থায় ফেরৎ দেওয়ার অঙ্গীকার করলে আমি বইটা ধার দিতেও রাজী আছি।

দ্বারকানাথের তৈলচিত্র আর তাঁর ব্যবহৃত কিছু জিনিস দেখার পরে বাকি সবকিছু কেমন ফিকে লাগছিল। এরপর আমরা দোতলা থেকে তিনতলায় গিয়ে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঘর, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিল্পকলার কিছু নমুনা দেখলাম। তিনতলার বারান্দা থেকে সামনের মাঠের দৃশ্য দেখতে বেশ সুন্দর লাগে। ঠাকুরবাড়ির একটা অংশে কিছু লোকজন থাকে আর কিছু অংশে বিশ্বভারতীর কাজকর্ম হয় বলে সেই অংশগুলোতে সাধারণ মানুষকে যেতে দেওয়া হয় না। আমরা ছাদটা একবার দেখে নিয়ে নিচে নেমে এলাম।

বাড়ির ভিতরের উঠোন
বাড়ির ভিতরের উঠোনে একটা নাটমন্দির গোছের আছে, যেখানে চাইলে ছবি তোলা যেতে পারে। এই জায়গাতেই প্রতিবছর পঁচিশে বৈশাখ বিচিত্রানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এখানে এমনিতে দেখার সেরকম কিছু নেই, তাই আমরা কিছুক্ষণ বসে দু'একটা ছবি তুলে বেরিয়ে এলাম। ঠাকুরবাড়ির গেটের কাছ থেকে পুরো বাড়িটার ছবি তোলা যেতে পারে, যদিও এখানকার লোকজন সেটা ভালোভাবে নেয় না। যাই হোক আমাদের সময় শেষ হয়ে গিয়েছিল, তাই আমরা এবার বেরিয়ে এলাম জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি থেকে।

উপসংহারঃ

জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি
জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে বিভিন্ন সময়ে অনেক বিশিষ্ট মানুষেরা জন্ম নিয়েছেন। প্রিন্স দ্বারকানাথের জ্যেষ্ঠপুত্র মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর বাবার মতো ব্যবসায়ী না হলেও ছিলেন ধনী জমিদার ও ব্রাহ্মসমাজের প্রাণপুরুষ। তাঁর পুত্র দ্বিজেন্দ্রনাথ ছিলেন দার্শনিক ও কবি। আরেক পুত্র সত্যেন্দ্রনাথ প্রথম ভারতীয় যিনি সিভিল সার্ভিসে চাকরি পেয়েছিলেন। আরেক পুত্র জ্যোতিরিন্দ্রনাথ তাঁর বাবার সঙ্গে জমিদারীর দেখাশোনা ছাড়াও নিজে একটি জাহাজ চালাতেন। অবনীন্দ্রনাথ ও গগনেন্দ্রনাথ শিল্পকলা ও ছবি আঁকায় বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। ঠাকুরবাড়ির মহিলা সন্তানদের মধ্যেও অনেক কৃতী সন্তান জন্মেছেন। আর সর্বোপরি রবীন্দ্রনাথ - যাঁর সম্পর্কে যে কোনও কথাই সর্বজনবিদিত, তাই আলাদা করে আর কিছু লিখছি না। এঁদের সবার বাড়ি - জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি। এই বাড়ির প্রতিটি কোণায় রয়েছে এইসমস্ত স্বনামধন্য মানুষদের কীর্তিকলাপের নিদর্শন। এঁদের সম্পর্কে আমরা বইতে যাইই পড়ে থাকি, এই বাড়িতে গিয়ে সেগুলো চাক্ষুস দেখার অভিজ্ঞতাই আলাদা। তাই এই অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের জন্য অবশ্য গন্তব্য জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি !